আমাদের সম্পর্কে
সীরাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও খোলাফায়ে রাশেদার সোনালি যুগের অধ্যয়ন দ্বারা মুসলমানগণ বিশুদ্ধ আকিদায় বিশ্বাসী হয়ে ওঠে। ঈমানি শক্তিতে বলিয়ান হয়। তবে শর্ত হলো, ইসলামের পূর্ণাঙ্গ ও পরিপূর্ণ স্বরূপের ওপর প্রতিষ্ঠিত এ দুটি ঝরনাধারার জ্ঞান আহরণ করা উচিত মুসলিম মনীষীদের হাতে রচিত প্রামাণ্য গ্রন্থাদি থেকে। মুসলমানগণ তাদের মহান পূর্বসূরিদের থেকে যে সুবিশাল জ্ঞানভান্ডার লাভ করেছে সেগুলোকে যদি রক্ষণাবেক্ষণ ও কাজে লাগাতে পারত তাহলে আজকে তাদেরকে এ দৈন্যতায় পড়তে হতো না। এখনো যদি, মুসলিমউম্মাহ চিন্তাগত পশ্চাদপদতা, সংকীর্ণতা ও সাংস্কৃতিক দৈন্যদশা-সহ সামগ্রিক বিপর্যয় থেকে বেরোতে চায় তাহলে তাদেরকে বিশুদ্ধ উৎসের জ্ঞান ও চিন্তা চর্চার সাথে সাথে ইসলামের প্রাথমিক ইতিহাস অধ্যয়ন করে কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে হবে। আর এরই লক্ষ্যে আমরা কিছু তরুণ, বিশুদ্ধ চিন্তা-চেতনার উন্মেষ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও খোলাফায়ে রাশেদার সীরাতচর্চা, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও পূর্বসূরিদের অনুকরণীয় চিন্তা থেকে উৎসারিত পাথেয় খুঁজতে ২০১৪ সালের মে মাসে ঢাকা থেকে প্রকাশ করি ‘ত্রৈমাসিক হেরার জ্যোতি’ নামে একটি পত্রিকা।
এর আগে ২০০৯ সালে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা অন্তর্গত মনতলা হামিউস সুন্নাহ মাদরাসায় ‘আনজুমানে তাবলীগুল কুরআন মোমেনশাহী’ নামে আমরা একটি তরুণ কাফেলা প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। এ কাফেলার সার্বিক দিকনির্দেশনায় ছিলেন বৃহত্তর মোমেনশাহীর অন্যতম মুরুব্বি হযরত মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী। তাঁর তত্ত্বাবধানে মোমেনশাহী জেলায় আমরা দীন-প্রচার ও স্বেচ্ছাসেবামূলক কিছু কাজ করেছিলাম। সাদী সাহেব হুজুর ছাড়াও আমাদেরকে বিভিন্নভাবে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন শায়খুল হাদীস মাওলানা গিয়াস উদ্দীন শায়খে বালিয়া রহ., মাওলানা আব্দুর রহমান হাফেজ্জী হুজুর (হাফিযাহুল্লাহ), কারী আব্দুর রাজ্জাক রহ.-সহ মোমেনশাহী জেলার শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরাম এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
এরপর ‘ত্রৈমাসিক হেরার জ্যোতি’ পত্রিকার যাত্রা শুরু হলে মাসিক মদীনার সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দীন খান রহ. আমাদেরকে সার্বিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেন। পরামর্শ দেন। শুরুর দিন থেকেই আমরা তাঁর তত্ত্বাবধানে পত্রিকাটি নিয়ে একটু একটু করে অগ্রসর হতে থাকি। তাঁর কোমল ছায়া গায়ে মেখে আমরাও যেতে থাকি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সীরাতের সোনালি তোরণের দিকে। আমাদের প্রতি তাঁর স্নেহ ভুলবার মতো নয়।
তিনি ছাড়াও হেরার জ্যোতি পত্রিকাটি ঘিরে আমরা আরো কয়েকজন মনীষীর কোমল সান্নিধ্য ও একান্ত সোহবত পেয়েছিলাম। তাঁরা হলেন, যাত্রাবাড়ী মাদরাসার মুহতামিম মুহিউস সুন্নাহ মাওলানা মাহমুদুল হাসান, জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগের সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা আবুল ফাতাহ মুহাম্মদ ইয়াহইয়া রহ., এবং লালবাগস্থ হালিমা সাদিয়া মহিলা মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল মাওলানা মুজ্জাম্মিলুল হক কাসেমি রহ.। তাঁদের দিকনির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে আমরা সমৃদ্ধ হয়েছি।
এরপর আমাদের সাথিদের উচ্চশিক্ষার নিমিত্তে বিদেশ গমন উপলক্ষে সব কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে। প্রায় ১০ বছর পরে এসে আবারো যাত্রা শুরু করছে হেরার জ্যেতি। আরেকটু বিস্তৃত চিন্তাকে সামনে রেখে ২০২৩-এর মার্চে নতুন করে শুরু হচ্ছে ‘হেরার জ্যোতি’র দ্বিতীয় প্রকাশ। আল্লাহ তাআলা আমাদের কাজগুলো কবুল করুন।